নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে পরিবেশ মানবাধিকার আন্দোলন-পমা আয়োজিত সংগঠনের ১০ম বর্ষপূর্তি ও পরিবেশ চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী উৎসবে শিক্ষাবিদ, সমাজবিজ্ঞানী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, শিক্ষার্থীরাই পরিবেশবান্ধব বাংলাদেশ গড়তে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারে। তাই নানা কর্মসূচির মাধ্যমে তাদেরকে পরিবেশ সচেতন, আগ্রহী ও পরিবেশ আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে। তাদের ওপরই নির্ভর করছে আগামীর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। বহুমুখি কর্মসূচীর মাধ্যমে তাদের মেধা বিকাশ ও উন্নত চরিত্র গঠনের মাধ্যমে সত্যিকারের সুনাগরিকে পরিণত করতে হবে। তাদের সাফল্যের স্বপ্ন দেখাতে হবে, উন্নত ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখাতে হবে। একই সঙ্গে সে স্বপ্ন পূরণের পথও বাতলে দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের পরিবেশবান্ধব ও সত্যিকারের মানুষে পরিণত করা গেলে জাতির জনকের স্বপ্নের আদলে সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ার পথ মসৃণ হয়ে যাবে। পমা বহুমুখী কর্মসূচীর মাধ্যমে যেভাবে শিশুদের পরিবেশ সচেতন ও প্রতিভা বিকাশে প্রশংসনীয় অবদান রেখে যাচ্ছে তা অন্যরাও অনুকরণ অনুসরণ করলে একটি সুন্দর, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ অর্জনে বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না। আজ শনিবার (২৫ জানুয়ারি) পমা’র এক দশক পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত পরিবেশ চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে সনদ ও পুরস্কার বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
পমা চেয়ারপারসন শিক্ষাবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব প্রফেসর হাসিনা জাকারিয়া বেলার সভাপতিত্বে উৎসবে বিশেষ অতিথি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ও কর্ণফুলী গবেষক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইদ্রিস আলী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, প্রফেসর রুহুল আমিন।
সংগঠনের যুগ্মসম্পাদক অধ্যক্ষ বদরুল হাসান টিটু ও বাচিকশিল্পী অধ্যাপক রিফাত ফাতিমা তানসি’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন পমা’র সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আবসার মাহফুজ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন পমার উপদেষ্টা এস এম সিরাজদৌলা, লায়ন এ কে জাহেদ চৌধুরী, লায়ন জাহাঙ্গীর মিঞা, কাজী গোলাপ রহমান, নজরুল গবেষক ড. মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন, গ্রিন অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ’র প্রধান সমন্বয়কারী সরোয়ার আমিন বাবু, ইমরুল কায়েস, জসিম উদ্দিন মাহমুদ, রেজাউল করিম বাবলু, প্রিন্সিপাল অর্পিতা নারগিস, অধ্যক্ষ এম সোলাইমান কাসেমী ও পরিবেশকর্মী আবুল কালাম। ধন্যবাদ বক্তব্য দেন পমা’র সিনিয়র সহ-সভাপতি আমিনুর রশীদ কাদেরী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. ইদ্রিস আলী বলেন, সত্যিকারের দেশপ্রেমিক হয়ে গড়ে উঠতে হবে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে। মেধা ও সৃজনশীলতা দিয়ে সাজাতে হবে প্রিয় বাংলাদেশ। জাতির স্বপ্ন পূরণে শিশুরাই হচ্ছে আগামীর কান্ডারী। তাই তাদেরকে আলোকিত মানুষ তথা সুনাগরিকে পরিণত করার জন্যে সরকারের পাশাপাশি সকলকেই ভূমিকা রাখতে হবে। তাদের প্রতি কোনো প্রকার অবহেলা কাঙ্খিত সোনার বাংলাদেশ গড়ার পথকে কণ্ঠকাকীর্ণ করবে।
বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে প্রকৃতি ও পরিবেশ সুরক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্যে প্রফেসর হাসিনা জাকারিয়া ও চা গবেষক আমিন কাদেরীকে পমা সম্মাননা প্রদান করা হয়। একইসঙ্গে পরিবেশ চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ১০০ শিক্ষার্থীর হাতে সনদ, ক্রেস্ট ও পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। উৎসবের শুরুতেই অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা পরিবেশ বিষয়ক ছড়া-কবিতা আবৃত্তি ও গান পরিবেশন করে। শিক্ষার্থীদের উৎসবমুখর অংশগ্রহণে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ এক মহামিলনমেলায় পরিণত হয়।
