আমার বাবার ৪র্থ মৃত্যু বার্ষিকী নিয়ে আমার কিছু কথাঃ মোঃ কুতুব উদ্দিন রাজু

0 241

এমএসকে নিউজ :: আমার বাবার ৪র্থ মৃত্যু বার্ষিকী নিয়ে আমার কিছু কথাঃ মোঃ কুতুব উদ্দিন রাজু

বাবা, তুমি আছো অস্তিত্বজুড়ে

আগষ্ট মাসে আমার শ্রদ্ধেয় বাবা মুহাম্মদ আবদুল হালিম চৌধুরী (প্রকাশ আবদুল হালিম মেম্বার) এর ৪র্থ মৃত্যু বার্ষিকী,২০১৭ সালের ঠিক এই মাসে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন। দেখতে দেখতে ৪ বছর পেরিয়ে গেল ৮০ বছর বয়সে আমাদের ছেড়ে চলে যান। সেদিনেই বুঝেছি বাবাকে হারানোর শোকটা কতটা কষ্টের। যখন আমার ভগ্নিপতি কাজী শহীদ ভাইয়া ফোন করে বলল বাবা নেই তখন বিশ্বাস হচ্ছিল না আমার বাবা নেই। সেই সময়টা মনে পড়লে দমবন্ধ হয়ে আসে। বাবাকে হারিয়ে আমি পাথর হয়ে গেছিলাম।

আমার বাবা জীবন চলার পথে সৎ ভাবে বেচে থাকার জন্য অনেক কিছুই করেছেন। কিন্তু কোন দিন অসৎ কোন কাজে জড়িত ছিলেন না। বাবা ছিলেন সদাহাস্যমুখ মিশুক প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। তাই এলাকার প্রত্যেকটি মানুষই তাকে শ্রদ্ধা ও সম্মান করতেন, মাথার উপর থেকে বট বৃক্ষের ছায়ার মতো এতোদিন যে মানুষটি আগলে রেখেছিল। মাঝে মাঝে এমন একটা সময় সবার জীবনেই আসে যখন মানুষ সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে, তখন কারো পরামর্শ খুব জরুরী হয়ে পড়ে। সে সময়ে পাশে দাঁড়ানোর মতো আদর্শ একজন মানুষ হল বাবা।

একেকটা দিন বড় একা লাগে, বাবার স্পর্শটুকু, বাবার সেই মায়াভরা ডাক অথবা মাথায় হাত ভুলিয়ে দেয়া। বাবা থাকতে ভাবতাম, বাবা যদি না থাকেন, তবে আমি কিভাবে থাকবো ! বাবা নেই আজ ৪ বছর, বাবাকে ছাড়া বাঁচতে পারবো এ কখনো কল্পনা করিনি, কিন্তু বাস্তবতা বড়ই কঠিন। কেটে যাচ্ছে একেকটি দিন, মাস আর একেকটি বছর বাবা নেই, আছে বাবার অনেকগুলো স্মৃতি, অনেকগুলো কথা, যা ভুলতে পারিনা, ভোলা যায়না।

বাবার কথা খুব মনে হয় বাবা নামক সেই মানুষটা যদি এই মুহূর্তে আমার মাথায় তার অকৃত্রিম স্নেহের হাতটা বুলিয়ে দিতো সব সমস্যা যেন দূর হয়ে যেত। এখন আমি জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছি বাবা। নিজের স্বপ্নের সাথে বাস্তবতার অনেক অমিল তা এখন বুঝতে পারছি। চারদিকে অজ্র মিথ্যার ভিড়ে একটা সত্যের পিছনে ছুটছি নিরন্তর। পৃথিবীতে এত মানুষ কিন্তু একজন মানুষই মিলেনা অকৃত্রিম ভালবাসা উপহার দেবার। আর ঠিক তক্ষুনি আমার মনে হয় তোমার কথা। অনেক আনন্দের মুহূর্তে যে মানুষটা অবিচল থেকে আমাকে স্মরণ করে দিয়েছে ভবিষ্যতের কথা। মাঝেমধ্যে তুমি যখন আমার উপর রেগে যেতে তখন বুঝতে পারতাম না বাবা, যে তোমার ঐ কঠিন মাথার ভিতরেও যে পরিমাণ ভালবাসা লুকায়িত ছিলো পৃথিবীর সমস্ত ভালোবাসা জড়ো করলেও তার সমতুল্য হতে পারেনা।

বাবার আর্দশ, বাবার সততা, বাবার নৈতিকতা আমার কাছে অতুলনীয়। যাদের বাবা আছে তারা জানেনা বাবার ছায়াটা কতটা তার সন্তানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বাবাহীন পৃথিবীটা বেশ অদ্ভুত ! যাদের বাবা নেই তারা কেবল জানেন বাবার অনুপুস্থিতিটা কেমন। এক সময় বাবার বুদ্ধিছাড়া কোন কাজেই সফল হওয়া যেতো না, আর আজ বাবাকে ছাড়া চলতে হচ্ছে প্রতিটা মুহূর্ত। বুদ্ধিহীন অবস্থায় চলতে হচ্ছে এই অচেনা জীবন শহরতলীতে। কিন্তু বাবার সেই স্মৃতি বাবার সেই উপদেশমূলক কথাগুলো আজও আমার অন্তরকে গভীরভাবে নাড়া দিয়ে যায়! যার আদর্শ আমাকে মানুষ হতে সাহায্য করছে।

সারা জীবন বাবাকে মিস করবো। বাবার কথা মনে পরলে এখনো চোখে পানি চলে আসে।

আমার বাবার চলাফেরায় কেউ যদি মনে কষ্ট পেয়ে থাকেন, আল্লাহর ওয়াস্তে মাফ করে দিবেন। আপনাদের সকলের কাছে দোয়া চাই, আল্লাহ যেন আমার বাবাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন। আমিন! ছুম্মা আমিন!

Leave A Reply

Your email address will not be published.